সাগর চক্রবর্তী কমল, মাাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি)। মিসেস হাসিনা বেগম। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক। তিনি ১৯৭১ সালে মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন তবলছড়ির ভাগ্যপাড়া তুলাতলী গ্রামের সম্ভ্রান্তমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নাম মো: সাহেব আলী এবং মা অজিফা খাতুন। তার পিতা একজন শিক্ষক ও মা তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার।
পারিবারিক ভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত হাসিনা বেগম ১৯৯৬ সালে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। সেসময় আওয়ামীলীগের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটি ও পরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য মনোনীত হন। পারিবারিক ভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে নিজের যোগসুত্র থাকায় পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ নারীকে। তিনি গত পাঁচ বছরের বেশী সময় ধরে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সকলের বড় হাসিনা বেগম‘র ১৯৮৩ সালে সপ্তম শ্রেনীতে পড়াকালীন সময়ে মা-বাবার পছন্দে বিয়ে হয় আপন জেঠাতো ভাই দুলাল মিয়ার সাথে। স্বামী মো: দুলাল মিয়া পেশায় পল্লী চিকিৎসক। বিয়ের পরও লেখা-পড়া করেছেন কিছু সময়। তবে সামাজিক বাঁধা নিষেধের কারনে এসএসসি পরীক্ষা দেয়া হয়নি তার। বর্তমানে এক পুত্র ও তিন কণ্যা সন্তানের জননী এ মহিয়সী। ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবার বড় একমাত্র ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সমাজ কল্যান’ বিষয়ে মাষ্টার্স অধ্যয়নরত। এক মেয়ে বিএ পাশ করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। দ্বিতীয় মেয়ে বিএ অধ্যয়নরত এবং ছোট মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী।
গত ১৯ ফেব্রয়ারী ২০১৪খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিত মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনোয়ারা বেগমকে দুই হাজার ছয়‘শ এক ভোটে পরাজিত করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৫‘শ ৭১ ভোট।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের তৃনমুল নেতাকর্মীদের আগ্রহের কারনেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনকালীন সময়ে দলের নেতাকর্মীসহ মাটিরাঙ্গা উপজেলাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, জনগণের দেয়া দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্ঠা থাকবে তার।
অতীতেও নারী কল্যাণে নিজের ভুমিকা রাখার কথা দাবী করে বলেন, আগামীতেও নারীদের কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত রাখার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। তিনি নারী নির্যাতন রোধসহ নারী সমাজের উন্নয়নে কি কি করনীয় আছে তা সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের নারীদের সাথে কথা বলে ঠিক করবেন বলেও জানান। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর এ বিষয়ে তিনি তার করণীয় ঠিক করবেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয় মাটিরাঙ্গায় নারী শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে পিছিয়ে পড়া নারী সমাজের জন্য সম্ভব সবকিছু করবেন তিনি। মাটিরাঙ্গাকে তার ‘সংসার’ উল্লেখ করে তিনি এলাকার সুশীল সমাজের সহযোগীতা ও পরামর্শ প্রত্যাশা করেন।