সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেছেন, দেশীয় বিদেশী নানামুখী সংস্কৃতির আগ্রাসনে আমাদের শিল্প সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখা কাঠন হয়ে পড়েছে। আমাদের জাতীয় সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় যে তত্ব নীতি এখনো যথাযথভাবে বহুত্ববাদ বাংলাদেশে বহু মাত্রিক সংস্কৃতির প্রতিফলিত হয়নি। তবুও আমাদের র্শিপ সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার যে ঐতিহ্য তা ধরে রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে, একদিন না একদিন নিশ্চয় আমাদের অধিকার আদায় হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী সংস্কৃতি মেলায় আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় আরো বলেন, অনেকেই চায় আমাদের আদিবাসীদের সংস্কৃতিকে মিউজিয়ামে ঢুকিয়ে দেয়া হোক। মিউজিয়ামে ঢুকিয়েও শিল্প সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখা যায়। কারন সংস্কৃতি হচ্ছে লালন বিশ্বাস আর চর্চার বিষয়। একটি বাঘকে চিড়িয়াখানায় ভালো মানায় নাকি তার আবাসস্থলে ভালো মানায় তা আপনারাই বিবেচনা করবেন।
আমরা যদি আমাদের স্বকীয়তা সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই এবং তা চর্চা করি তাহলে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে পারব।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত এগার ভাষাভাষি ১৪টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির বন্ধন সুদৃঢ়ের পাশাপাশি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরতে জুম ঈসথেটিকস কাউন্সিল (জাক) এর উদ্যোগে রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাঙামাটিতে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা শুরু হয়েছে।
মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে ১৩তম মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট আদিবাসী লেখক চিত্রমোহন চাকমা। অনুষ্ঠানে জাকের শিল্পীারা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে। আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টর দেবাশীষ রায়, বরণ্যে নাট্যজন মামুনুর রশিদ মামুন, বিশিষ্ট সংস্কৃতি কর্মী শিশির চাকমা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাক-এর সভাপতি এ্যাডভোকেট মিহির বরণ চাকমা। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জাকের সাবেক সভাপতি ঝিমিত ঝিমিত চাকমা। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য সংস্কৃতিতে সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং সাহিত্য কবি সুহৃদ চাকমাকে মরণোত্তর ও সাহিত্য বীর কুমার তংচংগ্যাকে জাক সম্মামনা প্রদান করা হয়। সন্ধ্যায় আদিবাসী ম্রো, ত্রিপুরা, খুমি ও খিয়াং সম্প্রদায়ের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
এছাড়া মেলায় আদিবাসীদের বাব্যহার্য্য হস্ত ও কারুশিল্প, পোশাক-পরিচ্ছেদ এবং নানান অলংকার ও খাদ্য সামগ্রির স্টল প্রদর্শিত ও বিক্রয় হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত এগার ভাষাভাষি ১৪টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব হল বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু কেন্দ্র করে প্রতিবছর এই মেলার আয়োজিত হয়ে থাকে। আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী এ সামাজিক উৎসব শুরু হবে।
আগামী শনিবার আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা শেষ হবে।